সোনাগাঁওকে বিশ্বমানের পর্যাটন নগরী বানাতে চায় ইজ্ঞিনিয়ার শফিকুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক : ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম। তিনি পেশায় একজন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও ব্যবসায়ী। দীর্ঘদিন লন্ডনে অবস্থান করছিলেন। বাংলাদেশের প্রাচীনতম ইশা খাঁ’র রজধানী খ্যাত সোনাগাঁওয়ে তার পৈত্রিক নিবাস ও জন্মস্থান। দেশ থেকে উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যেই তিনি সর্ব প্রথম পাড়ি জমান লন্ডনে। বিএসসি অনার্স ইন আইসিটি ও উচ্চ শিক্ষার ওপর আর একটি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। প্রবাস জীব তার কাছে শুধুই অন্য দেশ হিসেবে গণ্য হয়েছে। প্রবাসে বসেও তিনি দেশের জন্য কী করা যায় তা নিয়ে ভাবতেন।
গত ২০ বছর ধরে নিজ অর্থায়নে সোনারগাঁওয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন করেছেন। তার ইচ্ছা সোনারগাঁওয়ের পুরানো ঐতিহ্যকে আবার ফিরেয়ে আনা। নিজ অর্থায়নে এলাকার উন্নয়ন করলেও একটি সময়ে তিনি উপলব্ধি করতে পারেন যে, এলার সার্বিক উন্নয় করতে হলে প্রথমে তাকে নির্বাচিত জন প্রতিনিধি হতে হবে। এ বিষয় তিনি বলেন,‘ আমি বিগত ২০ বছর ধরে এলাকার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেক, মসজিদ-মাদ্রাসার সংস্কার করেছি আমার নিজ অর্থ খরচ করে। আমার একার পক্ষে নিজ অর্থ খরচ করে সব কিছু কন্ট্রোল করা সম্ভব নয়। আমার ইচ্ছা আছে এই এলাকার পুরানো ঐতিহ্য আমি আবার ফিরিয়ে আনবো।’তিনি আরো বলেন, উন্নয়মূলক কাজ করতে গিয়ে আমি উপলব্ধি করি যে, জন প্রতিনিধি না হয়ে সব কিছু করা সম্ভব নয়। কিছু দাপ্তরিক কার্য আছে যা জন প্রতিনিধি ছাড়া করা সম্ভব নয়। উন্নয়নের কাজ করতে হলে প্রথমে আমাকে জন প্রতিনিধি হতে হবে। রাজনীতিতে আসার কোনো ইচ্ছাই আমার ছিল না। শুধুমাত্র উন্নয়নের স্বার্থে আমি জন প্রতিনিধি হতে চাই।’
সোনারগাঁও তো একটি ঐতিহাসিক জায়গা এবং এর ঐতিহ্য তো আগে থেকেই আছে। এই ঐতিহ্যবাহী জায়গাকে আপনি আবার কীভাবে ঐতিহ্যবাহী করবেন?এমন প্রশ্নে জবাবে ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম বলেন,‘ এটা একটি সত্যি কথা যে, সোনারগাঁও মোগল আমল থেকেই বিখ্যাত। আমি এটাকে নতুন করে আর কী বিখ্যাত বানবো? আমার ইচ্ছ হলো- রাজধানী থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই স্থানটিকে তার পূর্বের মর্জাদা ফিরিয়ে দেবো। এখানে দর্শনীয় অনেক কিছুই রয়েছে। শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়াতে দর্শনার্থীরা এখানে আসে না। রাস্তার পরিপূর্ণ সংস্কার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে এখানে এতো বেশি দর্শদার্থী আসবে যে এই এলাকাকে পর্যাটন এলাকা হিসেবে বিখ্যাত হবে। দেশের দর্শনার্থীরা তো আসবেই পাশাপাশি বিদেশিরাও ভীড় জমাবে এখানে। এতে দেশে অনেক পর্যাটক আসতে শুরু করবে এবং সংশ্লিষ্ট খাতে আয় বাড়বে।’ তিনি আরো বলেন,‘ আমি যদি আমার মতো করে এই এলাকাটাকে সাজাতে পারি তাহলে শুধুমাত্র সোনারগাঁও থেকে পর্যাটন খাতে যে আয় হবে তা দিয়ে আরো কয়েকটা এলাকার উন্নয়ন করা যাবে।’
জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হলে আপনি কোন কোন বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম বলেন,‘ স্বপ্ন আছে যে, জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হবো। জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি আমার সম্পর্কে একটু খোঁজ খবর নেন তাহলে আমি এই এলাকা থেকে মনোনীত হবো। যদি দলের সমর্থন পাই তাহলে আলাহর ইচ্চায় অবশ্যই আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবো। আর নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নতো সর্বাগ্রে এর পর আর একটি বিষয় হলো শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়ে কাজ করবো। সোনারগাঁও জুড়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এখানের শিক্ষার্থীরা ঢাকার বিভিন্ন কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করে। শিক্ষার্থীরা ঢাকায় গিয়ে যখন ক্লাস করে তখন যাতায়াতের জন্য তাদের শারিরীক ক্ষতি হয়। ক্লাস শেষ করে বাড়িতে ফিরলে তাদের অন্য কিছু করার ইচ্ছা ও আগ্রহ কিছুই থাকে না এমন কি তাদের পড়া শোনা করার ইচ্ছাও থাকে না। এতে তাদের পরীক্ষার ফলাফল সন্তোশজনক হয় না। এই এলাকার শিক্ষার্থীরা যদি এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজগুলোতে অধ্যায়ন করার সুযোগ পেতো তাহলে সোনাগাঁওয়ের ছেলে/মেয়েদের গড় ফলাফল ভাল হতো।’
যে কারণেই হোক আপনি তো রাজনীতিতে আসতে চাচ্ছেন। রাজনীতির মাঠে আপনি কাকে অনুসরণ করতে চাচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘ রাজনীতির কথা আসলেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম চলে আসে। বঙ্গবন্ধুর বিকল্প আমি ভাবতে পারি না। যেহেতু তিনি বেচে নেই তাই তাকে বুকের মধ্যে লালন করে তার আদর্শে যারা রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাদেরকেই অনুসরণ করতে চাই। আমার শ্রদ্ধাভাজন জনাব আবদুল গাফফার চৌধুরীর কাছে আমি বঙ্গবন্ধুর অনেক গল্প শুনেছি, তার নেত্রীত্বের কথা শুনেছি, তার ত্যাগের কথা শুনেছি, তার স্বপ্নের কথা শুনেছি। আমি তার আদর্শে আদর্শীত হতে চাই।’
আপনি একজন ব্যবসায়ী হয়ে উচ্চ শিক্ষা জন্য কীভাবে কাজ করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম বলেন,‘ আমি একজন ব্যবসায়ী কথাটি ভুল নয়। লন্ডনে আমার একটি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট রয়েছে। এছাড়াও আমার লেখা পড়া আইসিটি নিয়েই। বিশ্বব্যাপী আইসিটির বেশ চাহিদা লক্ষণীয়। বাস্তবমুখী শিক্ষা, কর্মমুখী শিক্ষা ও আইসিটি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আমি কাজ করতে পারবো। লন্ডনে আমি দেখেছি কীভাবে একজন জন শক্তিকে দক্ষ জনশক্তিতে পরিনত করে। আমার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী যদি খোঁজ নিয়ে দেখেন তাহলেই সে বুঝবেন যে আমি এর যোগ্য কী-না?’
ভিশন ২০২১ বাস্তয়ননের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এবিষয়ে আপনি কিছু বলুন….। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ঘোষণা হয়েছে। ভিষণ ২০২১ বাস্তবায়নের দিকে এগুচ্ছে সরকার। সরকারের বিভিন্ন সাফল্য আমাদেরকে উৎসাহিত করে। ইতোমধ্যে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। আবার ফাইভ জি’র পরীক্ষার কার্য শুরু হয়েছে, মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ চলছে এবং পদ্মা সেতুর এখন দৃশ্যমান। শুধু তা-ই নয়, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তারি লক্ষ্যমাত্র নিয়ে এগুচ্ছে দেশ। সুতরায় বলা যেতে পারে যে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের দিক থেকে কোনো কৃপণতা করেনি। এই ধারা অব্যহত রাখতে এবং ভিষণ ২০২১ বাস্তবায়নের জন্য এই সরকারকে অন্তত আরো একবার ক্ষমতায় আসা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’